সিলেট, ২৫ জানুয়ারী : গাড়ি মালিককে ছিনতাইকারী সাজিয়ে মামলা ও গ্রেফতারের অভিযোগ করেছেন সিলেট নগরীর ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কলবাখানি - ৫৭ এলাকার মৃত আজমল হোসেন এর ছেলে মোঃ আজহার হোসেন উজ্জল। তিনি সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবে শনিবার (২৫জানুয়ারি) বিকাল ৩টার সময় লিখিত বক্তব্যে এই অভিযোগ করেছেন। তিনি নিজে একজন একাউন্টেন্ট হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেন যে, তার নিজস্ব বাসা, দোকান ও সিএনজি অটোরিকশা ব্যবসা রয়েছে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে মামলার আসামী, গ্রেফতার ও তার বিরুদ্ধে মানহানিকর সংবাদ পরিবেশ করা হয়েছে যা মিথ্যা ও সাজানো।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ২১ জানুয়ারী কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি ছিনতাই মামলা দায়ের করা হয় এবং এই মামলায় প্রশাসন তাকে একজন ছিনতাইকারী ও মামলায় ২নং আসামী হিসেবে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে। শুধু জেল হাজতে প্রেরণ নয় তার ছবি জোরপূর্বক ব্যবহার করে এসএমপি মিডিয়া শাখা থেকে প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ায় মিথ্যা তথ্য প্রদান করা হয় ৷ প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, তিনি একজন সিএনজি অটোরিকশার মালিক এবং এ ঘটনায় তার কোনো নূন্যতম সংশ্লিষ্টতা নেই ৷
এই ঘটনার তিনদিন পূর্বে ১৭ জানুয়ারি তার মালিকানাধীন সিএনজি অটোরিকশাটি (সিলেট থ- ১২৩৪৫৪) সাইফুল আলম লখন (ড্রাইভিং লাইসেন্স নং এসএল ০০৪০৫৬৮৯ এল০০০১) ভাড়া নেন। ড্রাইভার লখন সিএনজি অটোরিকশার মালিককে জানান, তিনি সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ এলাকার রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি নগরীর আম্বরখানা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই এলাকার রমজান মিয়ার কলোনিতে থাকেন।
বিগত ২০ জানুয়ারি বিকালে গাড়ি মালিক উজ্জল তার প্রয়োজনে ড্রাইভার লখনকে কল দিলে সে জানায় যে, সে বদলি ড্রাইভার দিয়েছে। পরে রাত ৯টায় মোবাইলে সাবিনা ইয়াসমিন নামক এক মহিলার অভিভাবক তাঁকে ফোন দিয়ে জানান যে, তার সিএনজি অটোরিকশার চালকসহ তার সঙ্গীয় ২জনসহ মোট তিনজন উনার কানের স্বর্ণ ও নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ছিনতাইকারী হামিদুর রহমানকে আটক করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বাদীর আত্মীয় বলেন, সিএনজি অটো রিকশার মালিক হিসেবে তিনি যেনো থানায় যোগাযোগ করেন ৷ তখন রাত সাড়ে ১০টার সময় কোতোয়ালি মডেল থানায় যান এবং কোতোয়ালি থানার সেকেন্ড অফিসার আব্দুল আলীম তাকে বাদী পক্ষের লোকজনের সাথে বিষয়টি মিটমাট করে সমাধান করার জন্য বলেন। তখন বাদী পক্ষের লোকজন তার কাছে দুই লক্ষ টাকা দাবি করে বলে জানান তিনি। তিনি এ টাকা দিতে সম্মত না হওয়ায় তাকে মামলা দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় ৷ পরে রাত ৩টার দিকে তার ব্যবহৃত মোবাইলে অপরিচিত একটি নম্বর থেকে কল করে জানানো হয় যে, তার মালিকানাধীন সিএনজি অটোরিকশাটি সোবহানিঘাটে রয়েছে। এখান থেকে যেন সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে আসেন ৷ এর কিছুক্ষণ পরে এসআই মিজান তার বাসায় দেখা করতে আসেন এবং বাসার গেইট বন্ধ থাকায় তিনি চলে যান। এসআই মিজান তাকে এ সময় ওয়াটসআপে ফোন দিয়ে জানান, বিষয়টি সমাধানের জন্য সকালে যেন তিনি থানায় যান। যদি তিনি থানায় না যান তাহলে ছিনতাইকারী হিসেবে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। এ আগে তিনি বিষয়টি তদন্তে সহযোগিতার জন্য ড্রাইভারের সকল তথ্য এসআই মিজান কে প্রদান করেন।
পরেরদিন সকালে তিনি থানায় গেলে এসআই মিজান কোন কিছু না বলে তাকে গ্রেফতার করেন। তখন এস আই মিজান তাকে ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত বলে দাবি করেন৷ তিনি গাড়ির মালিক কিভাবে এই কাজের সাথে জড়িত তা তদন্ত করে দেখার অনুরোধ করেন। এই দিনে বিকালে থানা থেকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। পরেরদিন অর্থাৎ ২২জানুয়ারি আদালত থেকে তিনি জামিন লাভ করেন ৷ এ ঘটনায় বাদী সাবিনা ইয়াসমিন, তার সাথে অজ্ঞাত লোকজন ও এস আই মিজানের যোগসাজস ও পুলিশ কর্মকর্তাদের আচরণে তিনি হতবাক হয়েছেন বলে দাবি করেন ৷
তিনি সামাজিক ও আইনশৃঙ্খলা মান্যকারী একজন ব্যক্তি এবং তার সামাজিক মানুষ হিসেবে মান সম্মান রয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অপরাধী যেই হোক তাকে গ্রেফতার করে সঠিক বিচার হউক। এসআই মিজান জোরপূর্বক আমার ছবি তুলে বিভিন্ন ছিনতাইকারীদের সাথে ছবি ও মিথ্যা নিউজ এসএমপির পেইজে ও বিভিন্ন মিডিয়ায় আমাকে ছিনতাইকারী সাজিয়ে ছবি প্রকাশ করায় আমার মান সম্মান বিনষ্ট হয়েছে। তিনি সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ রেজাউল করিম পিপিএম সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের নিকট অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আপনারা সঠিক অপরাধীদের গ্রেফতার করুন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্য যেনো এভাবে আমার মতো সাধারণ মানুষকে ছিনতাইকারী সাজিয়ে মামলা, গ্রেফতার ও হয়রানি না করেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan